বিছানার একপাশে স্নিগ্ধা অগোছালো ভাবে শুয়ে আছে।আমি স্পর্শ করতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালাম। আলো আঁধারিতে ওর ঘুমন্ত মুখটা বড় পবিত্র লাগছে।আমি কিছুক্ষণ ওর ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে থেকে পাশের বালিশটায় শুয়ে পড়লাম।
স্নিগ্ধার সাথে আমার বিয়ে হয় বছর পাঁচেক আগে। আমি তখন সবে একটু লেখালেখি শুরু করেছি।দু একটা কবিতার বই বের হয়েছে।একদিন ২১-২২ বছরের এক তরুনী এলো অটোগ্রাফ নিতে।সে নাকি আমার লেখার ভীষন ভক্ত। আমি মেয়েটির মুখের পানে টানা দু' মিনিট তাকিয়ে থেকে, তার ডায়েরীতে লিখে দিলাম, " ভালোবাসি"।
;
;
হ্যা! সেই মেয়েটিই স্নিগ্ধা। পৃথিবীর সমস্ত মায়া দু ' চোখে ধারন করে যে মেয়েটি জন্ম গ্রহন করেছে তাকে ভালো না বেসে আমি থাকতে পারলাম নাহ।পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও ওকে আমি বিয়ে করি।ওর সাথে বিয়ের পরই আমার লেখক হিসেবে খ্যাতি পাই।মূলত ওর প্রেরনাতেই আমি উপন্যাস লেখা শুরু করি। কিন্তু তাই বলে কবিতা লেখাও ছেড়ে দেই নি। এবছর বইমেলায় তিনটা উপন্যাসের পাশাপাশি আমার একটি কবিতার বই ও প্রকাশের অপেক্ষায়।
;
;
মাস খানেক পর বইমেলা। বেশ চাপে আছি।রাত জেগে লিখতে লিখতে প্রায়ই তিনটে চারটে বাজে। একদিন মুখ গুঁজে লিখছিলাম।হঠাৎ তাকিয়ে দেখি,স্নিগ্ধা একটা খাতা হাতে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টি তাকাতেই ও লাজুক স্বরে বলল,
- একটা কবিতা লিখেছি।দেখবে??
আমি হেসে ওর খাতাটা হাতে নিলাম।হেলাফেলা ভাবে পড়তে গিয়ে রীতিমত চমকে উঠলাম।
চমৎকার ভাষা শৈলী। রীতিমত পাকা হাতের লেখা। ওকে উৎসাহ দিয়ে বললাম,
- লিখতে থাকো।ভালো হলে আমি নিজে কোনো প্রকাশকের কাছে তোমার কথা বলব।
;
;
বছরের মাঝামাঝি স্নিগ্ধার কবিতার বই বের হলো। মাসখানেকের মধ্যে ফেসবুকে ওর ফলোয়ার সংখ্যা হাজার দশেক ছাড়িয়ে গেল। সাহিত্যের ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে ফেসবুকের না না পেজে সবকিছুই আজ সিন্ধাময়। ওর পাঠককুল শুধু ওর কবিতা নয় রূপের ও গুনগ্রাহী। আমার তবু খারাপ লাগে নাহ, স্নিগ্ধা সত্যি ভালো লিখে।
;
সকাল থেকেই মেজাজটা গরম।কি লিখব কিছুই মাথায় আসছে নাহ। এক প্রকাশকের সাথে কথা হলো। কথায় কথায় জানতে চাইল,
-স্নিগ্ধার নতুন লেখা আছে নাকি!
আমি উত্তর দিলাম নাহ।লোকটা একটা কুৎসিত হাসি দিয়ে বলল,
- আপনার ভাগ্য বটে। এত সুন্দরী স্ত্রী ক'জনের হয় !!!
;
;
এত রাত করে বাড়ি ফিরলাম,তবু স্নিগ্ধা কোনো কৌতুহল দেখাল নাহ। রাতে খাবার পর স্টাডি রুমে বসে কি লিখব ভাবছিলাম।এমন সময় বেশ মোটাসোটা একটা বাঁধাই করা খাতা হাতে স্নিগ্ধা এল। টেবিলে খাতাটা রেখে বলল,
-একটা উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছি। পান্ডুলিপিটা পড়ে দেখো তো, কেমন হয়েছে।
খাতাটা হাতে নিয়ে বললাম,
-তোমার লেখা মানেই অসাধারন।
একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলল,
-তা আমি নিজেও জানি।
রাত চারটা-
স্নিগ্ধার লেখাটা শেষ না করে উঠতে পারছিলাম নাহ।ভাষা হারিয়ে ফেলছি। কি বলব আমি।আমি গত পাঁচ বছরেও এতটা ভালো লিখতে পারি নি।মুহূর্তে একটা সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি ওর কাছে হার মানব নাহ।
ওর পান্ডুলিপিটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে উঠে দাঁড়ালাম।বেডরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে আমি ঘুমন্ত স্নিগ্ধাকে দেখছি।অতি রূপবতী এ মেয়েটি গত পাঁচ বছরে আমাকে একটি সন্তান ও উপহার দিতে পারি নি।পারবেও নাহ। ছিল সন্তানের মত আমার লেখা।তাও কেড়ে নিল! আজ রাতই ডাইনীটার শেষ রাত হোক।
;
ঠোঁটদুটো একটু ফাঁক হয়ে আছে।গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসে বুকটা উঠানামা করছে। আর দেখব না আমি! চোখ বন্ধ করে শক্ত হাতে ওর গলাটা টিপে ধরলাম-
স্নিগ্ধার সাথে আমার বিয়ে হয় বছর পাঁচেক আগে। আমি তখন সবে একটু লেখালেখি শুরু করেছি।দু একটা কবিতার বই বের হয়েছে।একদিন ২১-২২ বছরের এক তরুনী এলো অটোগ্রাফ নিতে।সে নাকি আমার লেখার ভীষন ভক্ত। আমি মেয়েটির মুখের পানে টানা দু' মিনিট তাকিয়ে থেকে, তার ডায়েরীতে লিখে দিলাম, " ভালোবাসি"।
;
;
হ্যা! সেই মেয়েটিই স্নিগ্ধা। পৃথিবীর সমস্ত মায়া দু ' চোখে ধারন করে যে মেয়েটি জন্ম গ্রহন করেছে তাকে ভালো না বেসে আমি থাকতে পারলাম নাহ।পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও ওকে আমি বিয়ে করি।ওর সাথে বিয়ের পরই আমার লেখক হিসেবে খ্যাতি পাই।মূলত ওর প্রেরনাতেই আমি উপন্যাস লেখা শুরু করি। কিন্তু তাই বলে কবিতা লেখাও ছেড়ে দেই নি। এবছর বইমেলায় তিনটা উপন্যাসের পাশাপাশি আমার একটি কবিতার বই ও প্রকাশের অপেক্ষায়।
;
;
মাস খানেক পর বইমেলা। বেশ চাপে আছি।রাত জেগে লিখতে লিখতে প্রায়ই তিনটে চারটে বাজে। একদিন মুখ গুঁজে লিখছিলাম।হঠাৎ তাকিয়ে দেখি,স্নিগ্ধা একটা খাতা হাতে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টি তাকাতেই ও লাজুক স্বরে বলল,
- একটা কবিতা লিখেছি।দেখবে??
আমি হেসে ওর খাতাটা হাতে নিলাম।হেলাফেলা ভাবে পড়তে গিয়ে রীতিমত চমকে উঠলাম।
চমৎকার ভাষা শৈলী। রীতিমত পাকা হাতের লেখা। ওকে উৎসাহ দিয়ে বললাম,
- লিখতে থাকো।ভালো হলে আমি নিজে কোনো প্রকাশকের কাছে তোমার কথা বলব।
;
;
বছরের মাঝামাঝি স্নিগ্ধার কবিতার বই বের হলো। মাসখানেকের মধ্যে ফেসবুকে ওর ফলোয়ার সংখ্যা হাজার দশেক ছাড়িয়ে গেল। সাহিত্যের ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে ফেসবুকের না না পেজে সবকিছুই আজ সিন্ধাময়। ওর পাঠককুল শুধু ওর কবিতা নয় রূপের ও গুনগ্রাহী। আমার তবু খারাপ লাগে নাহ, স্নিগ্ধা সত্যি ভালো লিখে।
;
সকাল থেকেই মেজাজটা গরম।কি লিখব কিছুই মাথায় আসছে নাহ। এক প্রকাশকের সাথে কথা হলো। কথায় কথায় জানতে চাইল,
-স্নিগ্ধার নতুন লেখা আছে নাকি!
আমি উত্তর দিলাম নাহ।লোকটা একটা কুৎসিত হাসি দিয়ে বলল,
- আপনার ভাগ্য বটে। এত সুন্দরী স্ত্রী ক'জনের হয় !!!
;
;
এত রাত করে বাড়ি ফিরলাম,তবু স্নিগ্ধা কোনো কৌতুহল দেখাল নাহ। রাতে খাবার পর স্টাডি রুমে বসে কি লিখব ভাবছিলাম।এমন সময় বেশ মোটাসোটা একটা বাঁধাই করা খাতা হাতে স্নিগ্ধা এল। টেবিলে খাতাটা রেখে বলল,
-একটা উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছি। পান্ডুলিপিটা পড়ে দেখো তো, কেমন হয়েছে।
খাতাটা হাতে নিয়ে বললাম,
-তোমার লেখা মানেই অসাধারন।
একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলল,
-তা আমি নিজেও জানি।
রাত চারটা-
স্নিগ্ধার লেখাটা শেষ না করে উঠতে পারছিলাম নাহ।ভাষা হারিয়ে ফেলছি। কি বলব আমি।আমি গত পাঁচ বছরেও এতটা ভালো লিখতে পারি নি।মুহূর্তে একটা সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি ওর কাছে হার মানব নাহ।
ওর পান্ডুলিপিটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে উঠে দাঁড়ালাম।বেডরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে আমি ঘুমন্ত স্নিগ্ধাকে দেখছি।অতি রূপবতী এ মেয়েটি গত পাঁচ বছরে আমাকে একটি সন্তান ও উপহার দিতে পারি নি।পারবেও নাহ। ছিল সন্তানের মত আমার লেখা।তাও কেড়ে নিল! আজ রাতই ডাইনীটার শেষ রাত হোক।
;
ঠোঁটদুটো একটু ফাঁক হয়ে আছে।গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসে বুকটা উঠানামা করছে। আর দেখব না আমি! চোখ বন্ধ করে শক্ত হাতে ওর গলাটা টিপে ধরলাম-