Archive Pages Design$type=blogging

ওয়্যারউলফ!!

কথাটা বলতেই চোখের সামনে কি ভাসছে?? ৯-১০ ফুট লম্বা এক লোমশ পিশাচ আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, হাতে ধারালো নখের সমাহার, কানগুলা খাড়া, জিহ্বা বেরিয়ে আছে, লাল টকটকে জিহ্বা, আপনাকে দেখে মাথা উপরে তুলে মায়াবী কিন্তু ভয়ঙ্কর এক আর্তনাদ দিয়ে তেড়ে আসছে আপনার দিকে।।
তাই না??

ছোটবেলা থেকেই আমার প্রচুর আগ্রহ এই মানুষরূপী নেকড়েদের উপর। বাংলায় ওয়ারউলফকে বলা হয় "মায়া নেকড়ে"। আপনারা সকলেই হয়ত এদের সম্পর্কে টুকিটাকি জানেন। কারন, বর্তমান পপ-কালচারের একটা বিশাল জায়গা জুড়ে এই ওয়ারউলফের অবস্থান। ৯০ ও ৮০ এর দশকে প্রতি বছরেই নামীদামী ডিরেক্টরেরা এদের নিয়ে সিনেমা বানাতো। এদের ভিতর "হাউলিং" ফ্রাঞ্চাইজি সবথেকে সফল। বর্তমানে "টিভি সিরিজ", "মিউজিক ভিডিও", "কার্টুন" সহ বিভিন্ন জায়গায় ওয়ারউলফ এর ব্যাবহার দেখা যায়। এছাড়া ছোট সোনামণিদের গল্প "রেড রাইডিং হুড" ও "ব্রাদ্দার্স গ্রিম" এ আমরা ও্য্যারউলফ এর কিঞ্চিৎ অবয়ব দেখেছি। কিন্তু পূর্নিমার চাঁদ, জন্ম-দাগ, আর গভীর রাতের ভয়ার্ত হাউলিং ছাড়াও ওয়ারউলফের ব্যাপারে অনেককিছুই জানার আছে।
আজ আমি আপনাদের নিয়ে যেতে চেষ্টা করবো রহস্যময় ওয়ারউলফ এর গুপ্ত ডেরায়।।

**প্রথমেই আলোকপাত করতে চাই সেই ঘটনায় যার জন্য হাজার বছর পুরানো এই লিজেন্ড টেকনোলজির এই যুগে নতুন করে আতংকের খুঁটি গাড়োলো।

১৯৮৯ সাল, ফ্রান্স।
ফ্রান্সের এক বিখ্যাত মানসিক হাসপাতালের একটি সাইকিয়াট্রিক রিপোর্ট থেকে ২৮ বছর বয়সী একজন রহস্যময় রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। যে কিনা তাঁর প্রতিবেশীকে হত্যা করেছে নির্মমভাবে। হত্যার পদ্ধতিটি ছিল সম্পূর্ন ভিন্ন। হত্যাকারী মানুষটিকে ৬৬টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় কামড়িয়েছে এবং খুবলে নিয়েছে বেশ কিছু মাংস। হত্যাকারীকে থানায় নেওয়ার ১ মাস পর তাকে একজন ক্রিমিনাল সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে কথা বলতে দেওয়া হয়। টকিং সেশনে লোকটি যা বলে তা কিছুটা এমন ছিলঃ-
"আমি লোকটিকে তখনই খুন করেছি, যখন আমার ভিতরের পিশাচটি জেগে উঠেছিলো। যখন আমি আয়নায় নিজেকে দেখি তখন আমি আমার চেহারার পরিবর্তন দেখতে পাই। অধিকাংশ রাতেই আমি দেখতাম আমার সারা শরীর লোমে ভরে যাচ্ছে এবং আমার দাঁতে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করতাম।
আমি তখন নিজের বাসা থেকে বেরিয়ে পড়তাম এবং আশেপাশে কোনো আস্তাবল দেখলে সেখানে ঢুকে রাখা ঘোড়াদের ভিতর একটিকে মারতাম। তারপর ঘোড়ার গলা থেকে কামড়িয়ে মাংস তুলে নিয়ে রক্ত খেতাম। গরম রক্ত খেতে আমার ভালো লাগতো আর একমাত্র রক্ত আর মাংস খেলেই আমার দাঁতের যন্ত্রণাটা কমে যেত। কিন্তু মানুষের রক্ত আমার বেশি পছন্দ"।।

এই সেশন থেকে বেরিয়ে আসার পর তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাইকিয়াট্রিস্ট এই কেসটি নিয়ে দেড় বছর কাজ করেন এবং ফলাফল হিসাবে বলেন যে লোকটির "লাইকেনথ্রপি" নামক এক জটিল মানসিক ব্যাধি আছে। এই রোগের ফলে সে নিজেকে নেকড়ে মনে করে। ৭ বছর কারাদণ্ডের পর তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার কথা বললে সে চিকিৎসা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে এবং বলে যে সম্পুর্ন সুস্থ্য হয়ে গিয়েছে।।
এই মানুষরূপী জানোয়ারটা আর কত বছর ঘুরে বেড়িয়েছে ফ্রান্সের অলিতে-গলিতে কারও জানা নেই।।

**আমি এই কাহিনী বর্ননার মাধ্যমে হয়ত আপনাদের বোঝাতে পেরেছি যে মর্ডান যুগে কিভাবে ওয়ারউলফ এর আগমন ঘটলো, কিন্তু এখনও নিজেকে সন্তুষ্ট করতে পারছি না।
চলুন যাওয়া যাক ওয়ারউলফদের আদি ইতিহাসের দিকে।

মিথোলজির পাতা ঘাটতে ঘাটতে আমার চোখ পড়লো "গ্রিক" মিথোলজির এক বিশেষ ঘটনায়।
"এথেন্স" এর একটি পাহাড়ের উপর ২০০০ বছর আগে এক ধরনের রিচুয়াল অনুষ্ঠিত হত। "হিউম্যান স্যাকরিফাইস" নামক এক আজব রিচুয়াল এটি। এর মাধ্যমে পাহাড় সংলগ্ন বনের ভিতরথাকা রহস্যময় হিংস্র জন্তুকে খুশি করার জন্য প্রতি মাসে একটি করে মানুষ বলি দিত তারা। এই বলি দেওয়া মানুষের মাংস যদি অন্য কোনো মানুষ খেতো, তাহলে সে প্রচুর শক্তিশালী হয়ে যেত এবং রাতের বেলায় নেকড়ের রূপ ধারণ করতে পারতো। যদি ৯ মাস পর্যন্ত সেই মানুষ কোনো ধরনের মাংস স্পর্শ না করে তবে সে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এরকম কিছু একটাও উল্লেখ করা ছিল সেখানে। কিন্তু সেখানে আরও একটি কথা উল্লেখ করা ছিল আর তা হলো, "নেকড়েরূপীদের রক্ত-মাংসের নেশা দমন করা দুঃসাধ্য ব্যাপার"।।

"বাইবেল"এর "জেনেসিস ভার্স-২৭" এ ওয়ারউলফ এর কিঞ্চিৎ ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সেখানে এমন এক জন্তুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা রাতে বৃহদাকারের নেকড়ের রূপ ধারণ করে শিকারে নামতো এবং সকাল হলে মানুষরূপে ঘুরে বেড়াত সাধারণ জনগণের ভিড়ে।

**এবার চলুন আপনাদের নিয়ে যাই ফ্রান্সের ইতিহাস কাঁপানো দুই হত্যাযজ্ঞের ঘটনাস্থলে।

১ম ঘটনাটি আমি জানতে পেরেছি বিখ্যাত ফরাসি হিস্টোরিয়ান "মিশেল মোশেই" এর একটি স্টেটমেন্ট থেকে।

১৬০৩ সালে ফ্রান্সের মধ্যভাগের এক গ্রামে একটি কুকুরের দুই ভাগকৃত লাস উদ্ধার করে স্থানীয় মানুষেরা। কুকুরটিকে কিছু একটা ধারালো নখের আঁচড়েই দুই ভাগ করে দিয়েছে। সকলেই মনে করে যে এটি হয়তো কোনো বন্য পশুরও কাজ। কিন্তু ঘটনা এখানে থমে থাকে নি। ২ দিন পরে একটি বাচ্চা হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। বাচ্চাটি তাঁর বাবার সাথে কাঠ কাটতে বনে গিয়েছিল কিন্তু আর ফেরে নি। সন্ধ্যায় সকলে যখন মশাল জ্বেলে বাচ্চাটিকে খুঁজতে বের হয় তখন বহু খোঁজাখুঁজির পর বাচ্চাটিরও ছিন্ন বস্ত্র আর মাথার খুলির কিছু অংশ ছাড়া কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না। "জন ঘানিয়ে" ওই গ্রামেরই এক যুবক, দিন মজুরের কাজ করে জীবন চালায়। তাঁর প্রেমিকা "পাওলি" কাঠুরিয়ার মেয়ে। একদিন "পাওলি" বনের ভিতর কাঠ সংগ্রহে যাওয়ায় দেখতে পায় এক ভয়ানক দৃশ্য। সে দেখে একটি লোমশ জন্তু, কানগুলো মাথারও উপরে খাড়া করে তার দিকে চেয়ে আছে। প্রথমে কুকুর ভাবলেও তার সন্দেহ দূর হয় যখন জন্তুটা অবিকল মানুষের মত দুই পায়ে দাড়িয়ে তার দিকে ছুটে আসতে থাকে। সে কোনমতে তার প্রাণ বাঁচায়। এই ঘটনা একদিন তার প্রেমিক "জন ঘানীয়ে" কে বললে প্রত্যুত্তরে ঘানিয়ে যা শোনায় তা ছিল তার কল্পনার বাইরে। "ঘানিয়ে" বলে এই রহস্যজনক মাংসাশী আর কেউ নয় "ঘানিয়ে" নিজেই। পাওলি এই ব্যাপারটা কাউকে প্রথমে জানায় না। কিন্তু ১ সপ্তাহ পরে যখন একই ভাবে একজন মহিলার ছিন্ন বিচ্ছিন্ন লাস পাওয়া যায় তখন পাওলি "ঘানিয়ে"এর বলা সকল কথা গ্রামের প্রধানকে বলে দেয়। ঘানীয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে একটি সাধারণ কারাগারে রাখা হলে সেখানে সে দুইজন কর্মিকে কামড়িয়ে দেয়। এরফলে তাকে একটি গোপন ঘরে গল্যা লোহার শিকল পরিয়ে রাখা হয়। পরবর্তিতে ঘানিয়ে তিনটি হত্যারই দায় স্বীকার করে। তাই তাকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। সে নিজেজে ওয়ারউলফ দাবি করে এবং তার প্রেমিকা তাকে রূপান্তরিত অবস্থায় দেখেছে সেটাও বলে।।
আজও মধ্য-ফ্রান্সের মানুষেরা বিশ্বাস করে ঘানিয়ের অতৃপ্ত আত্মা নেকড়েরূপে ঘুরে বেড়াচ্ছে বনের ভিতরে।

২য় ঘটনাও ফ্রান্সের।
এটা আমি সংগ্রহ করেছি "জেভুডা"এর ওয়্যারউলফ এক্সপার্ট "জন ডেসাউ" এর একটি বক্তব্য থেকে।

"ঘানিয়ে" হত্যাকাণ্ডের পর ১৭৬৪ সালে ফ্রান্সের "জেভুডা" গ্রামে ১০০ জনেরও বেশি খুন হয় এক অজ্ঞাত খুনির হাতে। খুনির খুন করার পদ্ধতি দেখে কারও আর বুঝতে বাকি ছিল না যে এটি মানুষকৃত কিছু নয়। বরং কোনো হিংস্র জানোয়ার তাদেরহত্যা করেছে। অধিকাংশ লাসেরই মাথা আলাদা করে দিয়েছে এই পিশাচটি। থেকে থেকে শোনা যেত সেই ভয়াল জন্তুর ডাক। এই বুঝি কাউকে শিকার বানাল নির্মম পিশাচটি। সময়টা ছিল "কিং লুই দ্য ফিফটিনথ"(রাজা লুই পঞ্চদশ) এর। তিনি ঘোষণা দিলেন যে বা যারা এই পিশাচকে হত্যা করে তার ছিন্ন মস্ত নিয়ে আসতে পারবে তাকে ৬ হাজার পাউন্ড উপহার দেওয়া হবে। তিনি তার সেনাবাহিনীর ৫৬ জন সেরা সৈনিককে ভারি গোলাবারুদ সহ নিয়োগ করলেন পিশাচটিকে মারার জন্য। তারা ২০০০ এর বেশি বন্য নেকড়ে হত্যা করে এবং পুড়িয়ে ফেলে। কিন্তু পিশাচের হত্যাযজ্ঞ থামে না। দুঃখজনক ভাবে সকলেই ব্যর্থ হল। "জেভুডা" গ্রামে একজন ব্যাক্তি তাঁর ধর্মপরায়নতার জন্য বিখ্যাত ছিল। তাঁর নাম "জন চাস্তেল"। তিনি অত্যন্ত সাহসিও ছিলেন বটে। তিনি ৩টি পবিত্র রৌপ্য পদক গলিয়ে "রূপার বুলেট" বানালেন এবং নিজেই শিকার করলেন "বিস্ট অব জেভুডা" নামে খ্যাত সেই নরখাদক নেকড়েরূপী পিশাচটিকে।

এখান থেকেই মূলত হলিউডরা ধারনা পায় যে ওয়ারউলফদের মারতে "সিলভার বুলেট" ব্যাবহার করতে হয়।

তাহলে বুঝলেন তো?? কিভাবে হলিউড আর বর্তমান প কালচার ওয়ারউলফের ইতিহাসকে হাইজ্যাক করেছে?? :)

এখন "জেভুডা"তে ফ্রান্সের সব থেকে বড় নেকড়ের অভয়ারণ্য অবস্থিত। কিছু জুয়োলজিস্ট জেভুডার নেকড়ে পালকদের জিজ্ঞাসা করেছিল যে "রেবিস" রোগে আক্রান্ত নেকড়ের দল ১৭৬৪ সালের এই হত্যাযজ্ঞের জন্য দায়ি কি না। তখন তারা বলে, নেকড়েরা "রেবিসে" আক্রান্ত হলে নিজ প্রজাতিদের খেতে পছন্দ করে। আর সেই সময়ে যে সকল কামড়ের দাগ দেখা গিয়েছিল তা সাধারণ নেকড়ের দাঁতের দাগের তুলনায় ৩-৪ গুন বড়।
তাহলে কে ছিল বা কি ছিল এই "বিস্ট অব জেভুডা"? প্রশ্নের উত্তরটা মনে হয় জেভুডার ঘন বনের ভিতরে এখনো লুকিয়ে আছে।।

"প্রফেসর রটনই ডোবার" এর মতে সেই আমলে মানুষের "হাইপো ট্রাইকোসিস" সম্পর্কে ধারনা ছিল না বলে তারা অস্বাভাবিও চুলের বৃদ্ধিকে অন্যকিছু মনে করতো। রোমানীয় শাসক "প্যাট্রিস গনজালভেস" সেই আমলে "হাইপো ট্রাইকোসিস"এর অস্তিত্বের উজ্জ্বল উদাহরণ।

পরিশেষে আমি বলতে চাই কিছু কথা,
হতে পারে "লাইকেন্থ্রপি"। হতে পারে "হাইপো ট্রাইকোসিস"। কিন্তু নেকড়েরূপী পিশাচ যে ছিল এবং এখনও আছে এটা নিয়ে হয়তবা আপনাদের সন্দেহ আর নাই। আসলে আমাদের সকলের মনের কালো কুঠিরে এক ভয়নক পিশাচের আস্তানা আছে। কেউ তাদেরকে লাগাম দিতে পারে আবার কেউ পারে না। যদি সবাই লাগামটা লাগাতে পারতো তাহলে হয়তবা আমাদের পৃথিবীর এই করুন অবস্থা হত না। আসুন সকলেই নিজেদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা পিশাচটিকে পোষ মানাবার চেষ্টা করি। গড়ে তুলি একটি সুন্দর পৃথিবী।

COMMENTS

Name

আমার ভাবনাগুলো
false
ltr
item
Omonibus: ওয়্যারউলফ!!
ওয়্যারউলফ!!
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh5TDr_w-OjbXysi6yJmSR9UGYudAJbaXg1rGHki-m5Ci-NrU9CbjYCoJEux7j_65HZTuKcfcP9utewicJxnk-q2t_yO83Rx2wdYqNl7XkrFR86G9kpEMh2kxLDhbzowOtiKVXjrDbwh76S/s320/image1-764132.JPG
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh5TDr_w-OjbXysi6yJmSR9UGYudAJbaXg1rGHki-m5Ci-NrU9CbjYCoJEux7j_65HZTuKcfcP9utewicJxnk-q2t_yO83Rx2wdYqNl7XkrFR86G9kpEMh2kxLDhbzowOtiKVXjrDbwh76S/s72-c/image1-764132.JPG
Omonibus
http://omonibus.blogspot.com/2016/07/blog-post_11.html
http://omonibus.blogspot.com/
http://omonibus.blogspot.com/
http://omonibus.blogspot.com/2016/07/blog-post_11.html
true
1459505652775704545
UTF-8
Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago